কথোপকথন ৪


কবি: পূর্ণেন্দু পত্রী 


– যে কোন একটা ফুলের নাম বল

– দুঃখ।

– যে কোন একটা নদীর নাম বল

– বেদনা।

– যে কোন একটা গাছের নাম বল

– দীর্ঘশ্বাস।

– যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল

– অশ্রু।

– এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি।

– বলো।

– খুব সুখী হবে জীবনে।

শ্বেত পাথরে পা।

সোনার পালঙ্কে গা।

এগুতে সাতমহল

পিছোতে সাতমহল।

ঝর্ণার জলে স্নান

ফোয়ারার জলে কুলকুচি।

তুমি বলবে, সাজবো।

বাগানে মালিণীরা গাঁথবে মালা

ঘরে দাসিরা বাটবে চন্দন।

তুমি বলবে, ঘুমবো।

অমনি গাছে গাছে পাখোয়াজ তানপুরা,

অমনি জোৎস্নার ভিতরে এক লক্ষ নর্তকী।

সুখের নাগর দোলায় এইভাবে অনেকদিন।

তারপর

বুকের ডান পাঁজরে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে

রক্তের রাঙ্গা মাটির পথে সুড়ঙ্গ কেটে কেটে

একটা সাপ

পায়ে বালুচরীর নকশা

নদীর বুকে ঝুঁকে-পড়া লাল গোধূলি তার চোখ

বিয়েবাড়ির ব্যাকুল নহবত তার হাসি,

দাঁতে মুক্তোর দানার মত বিষ,

পাকে পাকে জড়িয়ে ধরবে তোমাকে

যেন বটের শিকড়

মাটিকে ভেদ করে যার আলিঙ্গন।

ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত হাসির রং হলুদ

ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত গয়নায় শ্যাওলা

ধীরে ধীরে তোমার মখমল বিছানা

ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে সাদা।

– সেই সাপটা বুঝি তুমি?

– না।

– তবে?

– স্মৃতি।

বাসর ঘরে ঢুকার সময় যাকে ফেলে এসেছিলে

পোড়া ধুপের পাশে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !