কবিতা
মৃত্যুর পর
আঁ খি রা য়
মাপছে সময় মাপকাঠিতে,
ঘরের কোণে নিথর দেহ৷
ভিড় জমেছে শরীর ঘিরে,
দেখাচ্ছে ওরা মেকি স্নেহ৷
জীবন্ত লাশকে দেয়নি মালা,
মৃত উপাঙ্গে দেয় ফুল৷
স্বার্থের অঙ্ক কষেছে অনেক,
তবুও হিসাবে আজ বেশ ভুল৷
কালচে চোখ, শুষ্ক চুল,
ফ্যাকাশে চামড়া শুনছে সব৷
কদরের বাহার ছোঁয় সিলিং,
নীরব ঘরের এই শেষ রব৷
চন্দনের গন্ধ,ধূপের ধোঁয়ায়
উঠছে ভরে চতুর্দিক৷
নোনতা ধারায় ভিজলেও মুখ,
বদলাবে না চেনা অতীত৷
অচল শরীরটা ক্লান্ত ভীষণ,
দাঁড়িয়ে আগুনের কাঠগড়াতে৷
মায়া মোহ ত্যাগ দিয়ে আজ,
পাড়ি দেবে মূল্যায়ন খুঁজতে৷
জীবন ও মৃত্যু
বি শ্বে শ্ব র ম হা পা ত্র
জীবনের মাঝে মৃত্যুকে দেখি
মৃত্যুর মাঝে দেখি জীবন জাগে,
রুক্ষ মাটির বুক ছিঁড়ে কুটিকুটি করা
সবুজ দুর্বার হাতছানি ভাল লাগে৷
ওদের জন্ম আজও অজানা
ভ্রূণের মাঝে নেই কোন বীজের পরিচয়,
ওরা আজও কুলিন হয়নি
আগাছা নামে সমাজের বুকে চির বিস্ময়!
হাজার পদের দলনে মৃত্যু
রোজ রোজই তো তাই মরে,
তবুও দেখি কোমলতা নিয়ে জেগে
প্রতি রাত শেষে শিশির ধোয়ানো ভোরে৷
ওরা স্রষ্টার চোখে সৃষ্ট নয় কি?
তবু কেন সে জীবনে মৃত্যু ফিরে ফিরে আসে ?
ওদের মৃত্যু ঘিরে ঘিরে দেখি
আজও তোমাদের বৈভবী জীবন হাসে৷
আত্মহত্যা
অ তু ল সে ন
আত্মহত্যা মহাপাপ বলে গুণীজন,
আত্মহত্যাই শান্তি দেয় ভাবে সর্বক্ষণ।
যেই জনের সুখ নাই, শান্তি নাই
পায় সর্বক্ষণ অবহেলা!
চারিদিকে মানুষের ভিড়, দিন শেষে একলা,
পরিবারে মূল্যহীন, স্বজন হারা।
সে জন সুখ খুঁজে আত্মহত্যার বেলা..
আত্মহত্যা মহাপাপ জানি আমি, তবু;
আত্মার যখন মৃত্যু হয়, শরীর বাঁচে কভু?
বাঁচাতে হবে হাজারো প্রাণ, বলতে হবে কথা,
প্রিয় মানুষগুলোর মনের কথা শোনো একবেলা।
জিজ্ঞাসা করো কি হয়েছে, প্রশ্ন করো হাজারো,
মনের কথা শুনে নাও, থাকো তাদের পাশে..
এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে যাবে না মান - সম্মান,
তোমার জন্য যদি বাঁচে হাজারো নিষ্পাপ প্রাণ।
একা
কা জী সু মা ই য়া
অনেকসময় আমাদের জীবনে এমন কিছু মানুষ আসে যে আমাদের একা বাঁচতে শিখিয়ে দিয়ে যায়,
এবং যে কিনা তখন পৌঁছে দেয় জীবনের এফোড়- ওফোঁড় করা এক শূন্যতায়!
কিন্তু আমি চাইতাম জীবনের প্রথম পৃষ্ঠায় থাকা প্রিয় মানুষটি সর্বদায় যত্নে বাঁচুক,
এবং পাশে থেকে আমার সঙ্গেই হাঁটুক।
সেই সাথে চাইতাম, আমরা পরস্পরকে যেন সবসময় ঠেলে এগিয়ে দিতে পারি জয়ের অভিমুখে,
কিন্তু আমি কখনো বিশ্বাসে যাইনি আমার বুকের খুব কাছের এই আপন মানুষটি এত তাড়াতাড়ি চলে যাবে নিজের মাটির কাছে!
সেবার যখন রিনুর দিনদিন শারীরিক অবস্থা অবনতি হচ্ছিলো।
তখন আইসিউতে যাবার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার সাথে খুব কথা বলতো।
কিন্তু সেদিন অক্সিজেনের মাক্স দিয়েও বেশিক্ষণ শ্বাস নিতে পারছিলো না সে! তিন দিনের মাথায়,
আমার বাম হাতের উপর থেমে যায় তার জীবন!
শেষবারের মত হৃদয় হয়তো তাকে কিছু বার্তা দিয়েছিল,
তাই তো শেষ মুহূর্তে শুধু বলেছিল:
"একটু সময় নিয়ে হলেও নিজেকে সামলে রেখো, মনের যত্ন নিও"
এরপর তার কথা অনুযায়ী তার কবরের পাশে লাগিয়ে দিয়েছিলাম জারুল গাছের চারা,
কি অদ্ভুতভাবে আজ তাকে ছাড়াই আমার একা বেঁচে থাকা
এবং সেও তো আছে কবরে একা!
অথচ একটা সময়ে তার গালভরা হাসির মাঝেই বাঁচার সাহস পাই।
এবং সে বলতো চার আঙুলের কপাল জুড়ে টিপ আর কাজল পড়লে তার নাকি ভীষণ করে বাঁচতে ইচ্ছে হয় !
অথচ বর্তমানে এই গানটা আমার এখন রোজ শুনা হয় :
"তুমি ভেঙ্গে পড়োনা এইভাবে
কেউ থাকে না চিরদিন সাথে
যদি কাঁদো এভাবে, তার ঘুম ভেঙ্গে যাবে"।
প্রশান্তির পথে
ডাঃ হ র্ষ ম য় ম ণ্ড ল
কখন ক্লান্ত হয়ে
সূর্যটা সময় ছেড়ে দিয়েছে চাঁদকে।
চাঁদটা টিবি রোগীর গয়ারের মতো
জ্যোৎস্না কুলকুচি করে ছিটোচ্ছে।
গাছগুলো নিঝুম রহস্যময় লাগছে।
ঘর বলতে বিশ্ব নিখিল ---
এক কালে সব ছিল ,এখনো আছে।
কদর্য মাখা স্বার্থপরতায় ভরা সংসারে
তখনও টিকে ছিল ,ভাবতাম
যাইহোক করে একটা জমাটি বুনন দিয়ে ছিদ্রগুলো রুদ্ধ করে প্রশান্তি আনবো।
তা হলো না, গোপনের বেড়াজালে
একে একে সাময়িক সুখের জন্য
মরুভূমির কিনারা থেকে মধ্যে ।
আর ফেরাতে পারব না জেনে
এক দীর্ঘ প্রশান্তির পথে।
মৃত্যু তুমি
নী তা ক বি মু খা র্জী
মৃত্যু তুমি ভয়ঙ্কর জানি, তবুও মেনে নিতে হয়
তোমার বিহনে অচল সৃষ্টি, চাই তোমার আশ্রয়
জীবনের কাজ শেষ হয়ে গেলে তোমার কোলেই ঢলি
মৃত্যুর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে তোমাকে ভয় করে চলি।
অকাল মৃত্যু ভীষন ভয়ঙ্কর কখনো যেন না আসে
জন্ম হলেই মৃত্যু হবে, বিধাতা-পুরুষ হাসে।
নতুন যখন করে শুরু পুরাতনের হয় সারা
এমনি করেই চক্রাকারে চলে জীবনের ধারা।
হাসি-কান্না, শীত-গ্ৰীষ্ম, রৌদ্র-ছায়ার মত
মৃত্যু তুমিও চিরবিদ্যমান অবাঞ্ছিত হও যত।
মৃত্যু দিয়েই তো শেষ নয় গো, নতুনের সাড়া জাগে
জরা-জীর্ণ অবসান হয়ে নব-কিশলয় হাসে।
সে হাসি দেখেই উদ্বুদ্ধ হই আশায় বাঁধি বুক
নব-পুরাতন মেলবন্ধনেই আসে জীবনের সুখ।
এই ভুবনে জীবন-মৃত্যুর খেলা চলে অবিরত
আসা আর যাওয়ার অমোঘ নিয়মের ইতিহাস শাশ্বত।
মৃত্যু
দী প ক মো ল্লা
অস্তিত্বের জন্য এ সংগ্রাম,
বলা ভালো জীবন সংগ্রাম।
গহীন আঁধার এ অন্ধের মত হাতছানি দেওয়া ,
এ এক বহুকোষী মানব দেহের গল্প ।
জীবন সংগ্রামের গল্প, লড়াই করার গল্প।
প্রতিনিয়ত যাকে যুদ্ধ করতে হয়, এ যুদ্ধ কিসের যুদ্ধ?
বেকারত্বের যুদ্ধ, হ্যাঁ একজন বেকার যুবকের যুদ্ধ,
ভালোবেসে ভালোবাসা কে না পাওয়ার সংগ্রাম।
সংসার চালানোর যুদ্ধ, অসুস্থ পিতামাতা কে সুস্থ করে তোলার জন্য যুদ্ধ।
যখন সন্তান পালনের ন্যায় ছাত্র তৈরি করেও,
তার অভিভাবকের থেকে অপ্রশংসিত হয়,
"ফলটা আরেকটু ভালো হলে ভালো হতো,"
বা ফল খারাপ হলে, "স্যার ভালো পড়াতে পারেন নি,
তোর জন্য এবার ভালো স্যার দেখবো।"
আর সমাজ, সমাজ আত্মীয়-স্বজন যখন বলে
"কি রে কি করিস এখন , এবার তো কিছু কর, অনেক তো হলো পড়াশোনা।"
হায় রে ভাগ্য!এভাবেও মানুষকে বেঁচে থাকতে হয়, আমার মত যুবক যুবতীদের বেঁচে থাকতে হয় !
হে ঈশ্বর ! এ কেমন বেঁচে থাকা, এ যে এক
জীবিত-মৃত দেহের গল্প।
এ মৃত্যু যে মনের ,এ মৃত্যু যে ভালোবাসার ,
সে মরে গেছে, যুদ্ধ করতে করতে অনেকদিন আগেই তার 'মৃত্যু ' হয়েছে।
মৃত্যুর সন্নিকটে..
চা ত ক পা খি
সেদিন সকালে খালি পেটে থেকে
উপস করে মেজো গিন্নী,
তুলসী মঞ্চে জল ঢেলে,
গোপালকে খাইয়ে তবে
প্রতিদিনের মতো
কিছু মুখে তুলবে বলে
রান্না ঘরে গিয়ে ঢুকলো।
আর ঢুকেই দেখে কাল রাতের
কিছু পান্ত রয়েছে,
মেজো গিন্নী যে
চাষীর ঘরের মেয়ে
ভাত ফেললে যে গায়ে লাগে
গা করকর করে,
তাই সে খাবে বলে স্থির করলো।
তাই কিছু পান্তে দিয়ে রাখা
আলু পেড়ে তাতে লবণ ছিটিয়ে,
চাষের সরষের তেল
ফোঁটা তিনেক ঢেলে,
আর লঙ্কা ভাজা না থাকায়
শুকনো লঙ্কাকে থেঁতো করে
তাতে দিয়ে চটকে নিলে।
আর ওদিকে যে
বেলা বাড়ে দেখে
অনেক কাজ রয়েছে পড়ে -ভেবে ,
তাই পেঁয়াজ না কুচিয়ে ,
বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে টিপে
থেঁতো করে তাতেই কামড় বসালে,
আর সবে খামল দুই ভাত খেলে।
আর খেতে খেতে শুনতে পেলে
গলা খেক্রানির আওয়াজ,
তাই উঠলেন বলে -
" এলেন বুঝি কর্তা বাবু,"
বলাও কি ,
কর্তা বাবু উঠেন বলে-
-"কই গো গিন্নী কোথায় গেলে?
কথা খানি শুনে
খেতে খেতে তাই মেজোগিন্নী
উঠলেন বলে -
"খাড়াও ,আসছি এই যে হয়ে গেছে,
যাও গিয়ে বাছুর খানা বাঁধ ,
চট করে হাত খান ধুয়ে
আসছি আমি চলে।"
এই কথা খান শুনি
প্রতিদিনের ন্যায় কর্তা বাবু
গুয়ালেতে গেলো চলে,
কিন্তু সে কি আর জানতো
সম্মুখে মৃত্যু দূত
রয়েছে দাড়িয়ে
মৃত্যুর খড়গ হাতে ।
ওদিকে মেজো গিন্নী,
খামল দুই ভাত খেয়ে
হাত খান চট করে ধুয়ে,
তরী মরি করে উঠে
ছাদন দড়ি খান লয়ে
যেই না পা বাড়িয়েছে গোয়ালের দিকে
অমনি গেলো পড়ে মেঝেতে।
আর উঠলো হটাৎ চিৎকার করে
দিকবিদিক জ্ঞান শুন্য,
তারই চিৎকার শুনে
ছুটে এলেন কর্তা বাবু ,
আর এসে দেখেন
গিন্নী যে মেঝেয় পড়ে
গ গ করে।
তাই কর্তা বাবু বুদ্ধি করে
বসালেন তাকে জাপটে ধরে
আর ডাক দিলেন গলা ছেড়ে
-"ওরে ,কে কোথায় আছিস?
-আয়রে ছুটে,
-গিন্নী যে কেমন করে
-হটাৎ করে পড়ে।"
ওদিকে খড়গ হাতে জমের দূত
দেখছে দাড়িয়ে চুপটি করে ,
মরলে বুড়ি নিয়ে যাবে জম পুরীতে
নাচতে নাচতে সঙ্গে করে,
এদিকে,সবাই এমন ডাক শুনে
ছুটে এলো এক এক করে
কেউ দিলো জল ,কেউ গেলো ডাক্তার ঘরে।
কিছু ক্ষন পরে ডাক্তার এলো ,
এসে দেখলো পেশার বাড়া,
আর উঠলো বলে -"ভাগ্য ভালো,
উপর করে বসিয়ে রেখেছিলে,
যাক মাথায় লাগে নি, হাতের
উপর পড়েছে,নচেৎ এ যাত্রা ই শেষ !
নিয়ে যেতে হতো শশ্মানে কাঁধে করে।"
প্রতিদ্বন্দ্বী
শু ভ জি ৎ ঘো ষ
৩-৪ মিলিয়ন প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে;
বারংবার পিছিয়ে পড়েছি, ঘাবড়ে গিয়েছি, পরিত্যক্ত ভয়ে !
শেষে ঠাই পেয়েছি; জরাজীর্ণ জরায়ু মাঝে,
নবীন রূপ আকড়ে ধরেছি, ভ্রূণ সাজে।।
ভূমিষ্ঠ হয়েছি, ঠাই নিয়েছি ধরিত্রী মাঝে,
প্রতিযোগিতা ফের চলেছে, সান্ধ্য-সাঁঝে;
শিক্ষা নিতে, হাত পেতেছি বক্ষ মাঝে, প্রাণ লুকিয়ে,
অর্থাভাবে ফিরেছি দ্বারে, ফেলনা মাটির মুখ বিষিয়ে।।
অনুমতি ব্যতীত, শ্বাস নেওয়াটাও যেনো মরণ সদৃশ;
দ্বন্ধে তখনও, প্রাণ লুটিয়ে মৃত্যু ভয়ের চাইনি হদিশ,
বারুদ ছিল বিস্ফোরণে, ঘ্রাণে ছিল অহংকার;
মেঘদূতটাও ভয়ের চোটে, করতো রক্তে জয় জয়কার !
আজ তবে এক নতুন দিবায়, প্রাণশক্তি লিপ্ত হায় !
জ্ঞানার্জনের সুযোগ থেকেও, ভয়ঙ্কর রূপ ঐ তমশায়;
স্বপ্ন বিলাসী পণ্য জীবন আমদানিতে,শিকার
মৃত্যু ভোরের স্বপ্নে; প্রতিদ্বন্দ্বীর অহংকার।।
মৃত্যুর ওপারে
সো না লী বর্মা না র্জ্জী
কেউ জানে না!
কখন কোথায়!
কার যে কখন
নিভবে বাতি।
খেলনা পাতি উঠিয়ে, সেদিন যেতে হবে ভিনদেশেতে।
নেই তো সেথা বন্ধু গুলি,
চোখ বুজলেই দেখতে পাবি।
সেই আশাতেই বসে আছি।
সময় হলেই নিববে বাতি,
তখন কোথায় সেই কান্না হাসি।
কোথায় পাবো তোদের দেখা,
কেউ জানে না সময়ের রেখা।
একদিন ঠিক আসবে সেদিন,
সবাই জানে যাবো যেদিন।
জীবন মৃত্যুর ভেলায় চড়ে ভিন দেশের ওই ঠিকানায়।
আমার মৃত্যুর পর
খুশি কর
আমার মৃত্যুর পর রেখে যাব একটা আস্ত ডায়রি,
কাছেই থাকবে -
অথচ দেখতে পাবে না !
হয়তো পাবে, এড়িয়ে যাবে।
দেখতে পেয়েও মূল্যহীন ভেবে ফেলে দেবে ...
কে জানে হয়তো আমার সাথে ওটাও পুড়িয়ে দেবে কিনা?
আমার এই মৃত্যুটা সাধারণ মনে হবে ,
কিন্তু ভিতরে একটা বিশাল ইতিহাস থাকবে ।
ঐতিহাসিকের অভাবে সবাই মেনে নেবে একটা নিছকই সামান্য মৃত্যু।
কে জানে কবে , আমার কফিন বক্স থেকে সেই ডায়রি টা উদ্ধার করবে একদল ঐতিহাসিক।
সেই স্যাঁতস্যাঁতে ভেজা ডায়রিটা পাঠোদ্ধার করে -
হানা দেবে আমার উত্তরের ঘরে।
যে ঘরটা আজ বন্ধ আছে হাজার বছর ধরে।
তারা আসবে...
আমার সব বইপত্তর লন্ডভন্ড করে উন্মাদের মত কিছু খুঁজবে ,
তারপর পেয়ে যাবে আর ও একশোটা ডায়রি!
তাদের চোখে থাকবে আবিষ্কারের হাসি ,
কিন্তু সেদিন আমি হয়ে যাব বাসি।
তারা আমার সব আবিষ্কার কে দেবে নবপ্রাণ,
আমি তখন মহাশূন্যে বিলীনমান।
তারা আমার অতীত খুঁজতে গিয়ে
অজান্তেই চোখের কোণাটা চিকচিক করে উঠবে।
সেদিন আমায় আকাশ বাতাস ভেঙে সবাই ডাকবে ..
হারিয়ে গিয়ে তারার ভিড়ে,
সবই দেখব লুকিয়ে লুকিয়ে।
কিন্তু আসব না ফিরে!
বেঁচে থাকতে দিলে না স্বৃকীতি! মরে যেতে কাঁদছো?
এখন সবই মিথ্যা আয়োজন।
গল্প
টান
জ য় শ্রী স মা দ্দা র
রাত দেড়টায় যখন মোবাইল টা টুংটাং শব্দ করে বেজে উঠল, তখন খানিক বিরক্ত, ক্লান্তি এবং খানিকটা দুশ্চিন্তার আভাস পেয়ে তমসা আধ খোলা ঘুমন্ত চোখে চাইল মোবাইলের স্ক্রিনে। অবশেষে, নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করলো না তমসার, কারণ ফোন টা আসছে অলোকের নম্বর থেকে। টানা কয়েকটা দিন ধরে অলোক কে নিয়ে যা যা কিছু চোখের সামনে ভেসে উঠছে, তাতে ছেলেটার প্রতি দুশ্চিন্তা হওয়াটাই স্বাভাবিক। সত্যি কথা বলতে অলোক কে ফোনে ও পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই এমন সময় আচমকা অলোকের এমন আগমনে তমসা ভীষণ উত্তেজনায় ফোন টা ধরল। ওপাশের চিরচেনা কন্ঠে শোনা গেল- "হ্যালো তমি, কালকেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরে এস। কাকিমার শরীরের অবস্থা ভালো নয়। বেলা ফুরিয়ে এসেছে। " তমসা খানিক ঘুমন্ত আধজাগা অবস্থায় একটা ধাক্কা খেল হঠাৎ। জোরালো ধাক্কায় মুখে কিছু বলতে পারলো না আর, এমন সময় ফের আওয়াজ এল ওপাশ থেকে, "তমি, নিজেকে শক্ত কর। কাল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিরে এসে বাড়িতে। " তমসা এতক্ষণে আওয়াজ দিল, "আমি ঠিক আছি। কালই ফিরব আমি। "
ফোন রাখার পর আরও এক দুশ্চিন্তা গ্রাস করলো তমসা কে। অলোকের খবর নেওয়া খুব দরকার ছিল। এই কদিন কোথায় অদৃশ্য ছিল অলোক!..... এইসব সাত পাঁচ ভাবনার মধ্যে তমসা এবার নিজেই ফোন করল অলোক কে। না......এবারও পাওয়া গেল না। সামান্য কিছুক্ষণের ব্যবধানে তমসার জীবন টা যেন দুর্বিষহ হতে বসেছে। সারাদিন পর রাতের এই অন্ধকার টুকু যেখানে শান্তির আবহ আনে, সেখানে কিছু সময়ের ব্যবধানে সেই অন্ধকার যেন ক্রমশ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরতে বসেছে। একরাশ যন্ত্রনা, দুশ্চিন্তা আর বিরক্তি তে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করল তমসার। এই মূহুর্তে আলোক কে কাছে পাওয়া খুব দরকার ছিল ওর। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোনে একটা মেসেজ এল......অলোকের নম্বর থেকে, "অযথা চিন্তা কর না। আমি তোমার কাছে সবসময় আছি। " অলোকের সারা পেয়ে তমসা একটু স্বস্তি পেল। বাইরে থেকে কাঁচের জানলা ভেদ করে অযাচিতভাবে খানিক আলো এসে ঘরটাকে খানিক আলো আঁধারিতে ভরিয়ে তুলেছে। তমসার কোনও দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তার চোখ সিলিঙে নিবদ্ধ। যন্ত্রনার লেশমাত্র না ফুটে ওঠা মুখাবয়বে, চোখের কোন থেকে গড়িয়ে পড়া জলে বালিশ ভিজে উঠেছে। অবশেষে, ক্লান্তিতে চোখ জড়িয়ে আসে ঘুমে। ঘুমের মধ্যে দেখতে পায়, তার সারা ফ্ল্যাট জুড়ে অলোকের উপস্থিতির ছাপ। কিন্তু, অলোকের কোনও চিহ্ন নেই। অবশেষে সামনের এক চিলতে বারান্দায় দেখা যায় অলোক কে। সারা শহর গভীর রাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন, শুধু কয়েক জায়গায় লাইট পোস্ট গুলো দাঁড়িয়ে একাকী প্রহরী স্বরূপ। দ্বিতলের বারান্দা হতে উপরে প্রকান্ড আকাশ দেখা যায়, তাতে অগুনতি তারা একসাথে চাঁদের হাট বসিয়েছে যেন। অলোক তারই একটা তারার দিকে চেয়ে আছে অন্ধকারের পানে, শুধু তার পা দুটো ভূমি থেকে খানিক উঁচুতে। তমসা কাছে যায় দৌড়ে, ছুঁতে চায়। তার হাত অলোকের শরীর ভেদ করে যায়। এবার অলোক তমসার পানে চায়, মনি বিহীন সাদা চোখে বলে ওঠে,"আমি আছি রে তমি। তোর কাছেই আছি। " এমন দুঃস্বপ্নে একপ্রকার নিস্তব্ধ চিৎকার করে ঘুম ভাঙে তমসার। ইতিমধ্যে সাতটা বেজেছে। জানলার কাঁচ ভেদ করে মৃদু রোদের আলো প্রবেশ করেছে ঘরে। তমসা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যাত্রা করে বাড়ির দিকে। গন্তব্য কোন্নগর। কোন্নগর স্টেশন থেকে মিনিট দশেকের হাঁটা পথ।
বহরমপুর থেকে কোন্নগর যাত্রা তে তমসা যখন স্টেশনে নামলো তখন অন্ধকার নেমে গিয়েছে। কয়েকজন কে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটা ক্রমশ দূরের অন্ধকারে মিশে গেল। তমসা বাড়ির পথ ধরল। বাড়ির প্রায় কাছাকাছি যেতেই বুকের ভেতর হাতুড়ি পড়তে থাকলো। বাড়ির সামনে এত মানুষের ভিড় । তবে কি সব শেষ.......এইসব ভাবনার মধ্যে তমসার ভেতর টা যেন দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে এমন সময় আওয়াজ এল পেছন থেকে, "এগিয়ে যা তমি। " তমসা পিছু দেখল। ফাঁকা রাস্তার একপাশে বাঁশঝাড়ে ঝি ঝি পোকা গুলো সরব হয়েছে মহানন্দে। একরাশ নিকষ কালো অন্ধকার ঝুপ করে নেমেছে বন মধ্যে। আশেপাশে আর কারও উপস্থিতি নেই তেমন।একাকী এমন পরিবেশে তমসার পিঠ বেয়ে এক ঠান্ডা চোঁড়া স্রোত নেমে গেল। তমসা কোনও রকমে লোকজনের ভিড় পেড়িয়ে সামনে এগিয়ে গেল। বাড়ির বাগানের সামান্য আলোয় , সুষমা দেবীর দেহ সাজানো খাট, সাদা ফুলে সুসজ্জিত। সমস্ত জায়গাটা তখনও ধুপকাঠির গন্ধে ম ম করছে।
সুষমা দেবী গত হয়েছেন প্রায় একমাস হতে চলল। তমসার কাজের শহরে ফিরে যাওয়ার সময় এসেছে। সব থেকে আশ্চর্য এই যে এর মধ্যে একবারও অলোকের দেখা পাওয়া যায় নি। তমসা ফিরে যাওয়ার আগের দিন সন্ধ্যেবেলা রওনা দিল অলোকের বাড়ি। তমসা দের পাড়ার শেষ বাড়িটা অলোকদের । বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে মাঝ রাস্তায় থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল সে। অলোকদের বাড়িতে সবসময় আলো ঝলমলে থাকে....তবে এত অন্ধকার কেন!! দূর থেকে দেখে পোড় বাড়ি বললে ভুল হবে না। সদ্য সামলে ওঠা ধাক্কা টা সয়ে আসেনি এখনও তারই মধ্যে এমন পরিস্থিতি , প্রতি মূহুর্তে তমসা কে ক্রমশ অসহায় করে তুলছিল। তমসা টলমল পায়ে সদর দরজার দিকে এগিয়ে চলল, এমনি সময় পিছন থেকে সেই চিরচেনা কন্ঠস্বর ভেসে এল খানিক দূর থেকে, "তমি, আমি এখানে। তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। এদিকে এস। " এবার গলির মোরে আলো আঁধারির বাঁকে অলোকের অবয়ব টা দেখা গেল। এতক্ষণে ধরে প্রান ফিরে পেল তমসা। এমন এক পরিবেশে লাজলজ্জার মাথা খেয়ে দৌড়ে ছুটে গেল অলোকের কাছে, তারপর নিজেকে কিছুক্ষণের জন্য মিশিয়ে নিল অলোকের সাথে। রাস্তার গুটি কয়েক লোক মধ্য যৌবনা তরুণীর এমন বাচ্চা সুলভ ইঙ্গিতের সাক্ষী রইলো। অভিমানের সুরে বলে উঠলো তমসা, "কোথায় ছিলে তুমি? কতবার ফোন করেও পাইনি। " উত্তর এল, "আমি তোর কাছেই আছি রে পাগলী। তোর টান আমাকে দূরে যেতে দেবে না। " তমসা ফের জিজ্ঞেস করে, " মা বাবা কই? আর বাড়ি এত অন্ধকার কেন? এরমধ্যে একবারও এলে না তুমি!! "এবারেও শান্ত গলায় উত্তর আসে, " ওদের জব্বলপুর পাঠিয়েছি, দেশের বাড়িতে। ওরা নেই বলে বাড়ি অন্ধকার। "এমনই এক মূহুর্তে তমসা খানিক ভরসা পায় অলোকের কাছে। অবশেষে প্রায় ঘন্টা খানেক বাদে তমসা বাড়ি ফিরে আসে। তমসা কে দেখে অমিয় বাবু কান্না তে ভেঙে পড়েন হঠাৎ , " তোকে একটা খবর দেওয়া হয়নি তমা। তোর মার চলে যাওয়ার খবর ও আমি দিয়ে উঠতে পারিনি তোকে।...... " অমিয় বাবু কে থামিয়ে দিয়ে তমসা বলতে থাকে, "অলোক ফোন করেছিল বাবা। ও না জানালে খবর পেতাম না তাড়াতাড়ি। এই তো কিছুক্ষণ আগেও বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গেল ও। " তমসার কথা শোনার পর শান্ত ভাবে বলতে থাকেন অমিয় বাবু, "গত মাসের শেষের দিকে কলকাতায় এক পথ দূর্ঘটনায় মারা যায় অলোক। তার দুদিন আগেই কথা দিয়েছিল তোর মা কে খুব তাড়াতাড়ি তোকে নিয়ে ঘর বাঁধবে। অলোকের গত হবার পর ওর মা বাবা দেশের বাড়ি চলে যায়। " অমিয় বাবুর কথা গুলো কেমন বেসুরো বাজতে থাকে। তমসা নিজেকে মানিয়ে উঠতে পারে না। সমস্ত অপ্রাসঙ্গিক সন্দেহ গুলো এবার সত্যি হবার মূহুর্তে, কিছুক্ষণ আগের অতিত হওয়া মূহুর্ত গুলো কানে বাজতে থাকে,...."আমি তোর কাছেই আছি রে পাগলী। তোর টান আমাকে দূরে যেতে দেবে না। " তমসা কোনওরকমে নিজের ঘরে যায়। এক লহমায় যেন সারা দুনিয়া টা অন্ধকার লাগে ওর....এমন সময় মোবাইল টা বেজে উঠে হঠাৎ। অলোকের নম্বর থেকে মেসেজ এসেছে। তাতে লেখা, "তমি আমি তোর সাথেই আছি...." আর এর সাথে একটা হাসিমুখ স্মাইলি। 🙂
প্রবন্ধ
মৃত্যুর তিন মুখ
শি বা শি স মু খো পা ধ্যা য়
জীবন একটি অনন্ত স্রোতের মত। জীবন গর্ভাবস্থায় মায়ের গর্ভে শুরু হয় এবং শেষ হয় হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের কার্যাবলী বন্ধ হয়ে। বিজ্ঞানীরা দেহকে নিজেই মনে করেন একটি জীবের সম্পূর্ণ অস্তিত্ব। মৃত্যুকে তিনটি ভাবে চিত্রিত করা হয়: শারীরিক মৃত্যু, মানসিক মৃত্যু এবং সামাজিক মৃত্যু।
• শারীরিক মৃত্যু হলো ক্লাসে অধ্যয়ন করা চিকিৎসা এবং জৈবিক মৃত্যু। মস্তিষ্কের তরঙ্গের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি, এবং কার্ডিয়াক এবং শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা বন্ধ হওয়া কে বলে শারীরিক মৃত্যু ।
• • মনস্তাত্ত্বিক মৃত্যু হল "অর্ধ-চেতনার জীবন"। আমরা ধরে নিই বিষণ্ণতা আসলেই এক ধরনের মানসিক মৃত্যুর। হতাশা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আখ্যানগুলি প্রায়শই অসাড়তা, উদাসীনতা, ইচ্ছার অভাব, ক্রিয়াকলাপে আগ্রহ এবং আনন্দ হ্রাস, হতাশা এবং আরও অনেক কিছু। আত্মহত্যার ধারণাকে শারীরিক মৃত্যু অনুভব করার ইচ্ছা হিসাবে দেখা যেতে পারে যদি সম্ভবত একজন ব্যক্তি ইতিমধ্যেই মানসিকভাবে মৃত বলে মনে করেন। মনস্তাত্ত্বিক মৃত্যু যে বিপরীতমুখী তা ওষুধ, কাউন্সেলিং, মনোবিশ্লেষণ, মেডিটেশন এবং অন্যান্য ধরণের থেরাপির মাধ্যমে বিষণ্নতার চিকিত্সাযোগ্য দিকটির সাথেও কথা বলতে পারে। মূল বিশ্বাস এবং মূল্যবোধের ক্ষতি, অন্যদের থেকে অবিশ্বাস এবং বিচ্ছিন্নতা, লজ্জা এবং অপরাধবোধ এবং স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অনুভূতি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। মানসিক মৃত্যু একটি স্বতন্ত্র পোস্ট-ট্রমা সিন্ড্রোমের বৈশিষ্ট্য।
• সামাজিক মৃত্যু এমনভাবে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয় যাতে কাউকে মৃত বা অস্তিত্বহীন বলে আচরণ করা হয়। সামাজিক মৃত্যুকে জৈবিক বা শারীরিক মৃত্যু থেকে আলাদা করা হয়: যখন দেহের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হয় এবং জীবনের জন্য কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। শারীরিক মৃত্যুর আগে সামাজিক মৃত্যু ঘটতে পারে।
• মৃত্যু জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদি আমরা সৎভাবে এবং ভয় না করে জীবনযাপন করতে চাই তবে আমাদের এটিও মেনে নিতে হবে যে মৃত্যু চূড়ান্তভাবে অনিবার্য। আমাদের ভয়ের মধ্যে বাঁচতে হবে না, বরং আমাদের জীবনকে উপভোগ কোরে সবচেয়ে ভাল উপায়ে বাঁচতে হবে।
মৃত্যু
সু দে ষ্ণা ম জু ম দা র
মৃত্যু এক উপলব্ধিকর বিষয়। মৃত্যুকে অতিক্রম করে কেউই অগ্রসর হতে পারবেনা।কারণ কথায় আছে - "জন্মিলে মরতে হবে,অমর কে কোথা কবে?"
অর্থাৎ জন্মগ্রহণ করলে তার মৃত্যু অনিবার্য। সাধারণ মানুষ নানা কর্মসাধনের মাধ্যমে তার সমাজের প্রতি ভালেবাসা, সৃজনশীলতার বিকাশ করে থাকে। মৃত্যু যেহেতু হবেই তাই তার পূর্বে নিজের নিজের অপূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করাটাই বাঞ্ছনীয়। যাতে মৃত্যুকালীন অবস্থায় শান্তিতে পরলোকের যাত্রায় গমন করা যেতে পারে। মৃত্যুকে জয় করলে তবেই তো মৃত্যুঞ্জয় হওয়া যায়, স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুঞ্জয় কবিতাতেও তার আভাস প্রস্ফুটিত হয়েছে। সুতরাং ভীতসন্ত্রস্ত থেকে নয়, মৃত্যুকে জয়ের মাধ্যমে যে আনন্দপ্রাপ্তি ঘটে তা আর কোনোকিছুতে ঘটে না। সৎ এবং সঠিক কর্মের মাধ্যমে মৃত্যুকে জয় করা সম্ভব।
মৃত্যু এক অচেনা বস্তুর ন্যায় জীবন থেকে সবকিছু কেড়ে নিয়ে চলে যায়। প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ স্বয়ং মৃত্যু নিয়ে হতাশা,বেদনা ব্যর্থতা,দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে মৃত্যু জয় করার বাসনার বহিঃপ্রকাশ তেমনই জীবনানন্দের কাছে তা আবার হতাশা,বেদনার মর্মছবি। সুতরাং নানান মানুষের নিকট মৃত্যু নানানভাবে উপস্থাপিত হয়। মৃত্যুকে যদি জ্বালাযন্ত্রণাময় ঘেরাটোপের বাইরে কল্পনা করা যায় তবেই মৃত্যুকে অনির্বচনীয় এক পরম শান্তি হিসেবেও কল্পনা করা যেতে পারে। অর্থাৎ মৃত্যুর পরে প্রত্যেক মানুষেরই আত্মা অপরিবর্তিত থাকলেও কায়া পরিবর্তিত হয়ে যায়। এই পরিবর্তনের মাধ্যমেই মনুষ্যজীবন, প্রাণীজীবন অতিবাহিত হয়।
Please do not enter any spam link in the comment box.